কীভাবে মানিয়ে নিতে হয়

প্রকাশঃ মার্চ ৯, ২০১৫ সময়ঃ ৪:০৫ অপরাহ্ণ.. সর্বশেষ সম্পাদনাঃ ৭:২৬ অপরাহ্ণ

তাজিন আক্তার, প্রতিক্ষণ ডটকম:

কোনো বিষয়ে আপনার ও আপনার সঙ্গীর  পছন্দ-অপছন্দ রয়েছে। আপনি হয়তো বলতে পারেন, ‘মানিয়ে নেওয়া ব্যাপারটা আমার একেবারে ভালো লাগে না। মনে হয় যেন, আমরা কেউই যা চাই, তা পাব না!’

adjustment between husband and wife 1

বাস্তবে, আপনাদের সামনে অন্ততপক্ষে তিনটে পথ খোলা রয়েছে:

১. আপনার মতামত না মানা পর্যন্ত আপনি একগুঁয়েভাবে জোরাজুরি করতে পারেন।
২. আপনি মুখ বন্ধ করে আপনার সঙ্গীর ইচ্ছা মেনে নিতে পারেন।
৩. আপনারা দু-জনেই মানিয়ে নিতে পারেন।

এই বিষয়ে নিশ্চিত থাকুন, আপনারা যদি সঠিকভাবে মানিয়ে নিতে পারেন, তাহলে আপনাদের মধ্যে কেউই অসুখী হবেন না। কিন্তু, কীভাবে  মানিয়ে নিতে হয়, তা বিবেচনা করার আগে, আপনার এই গুরুত্বপূর্ণ কৌশল সম্বন্ধে কয়েকটা বিষয় জানা উচিত।

আপনার যা জানা উচিত

মানিয়ে নেওয়ার জন্য একসঙ্গে কাজ করতে হবে। বিয়ের আগে আপনি হয়তো একাই বিভিন্ন সিদ্ধান্ত নিতে অভ্যস্ত ছিলেন। কিন্তু, এখন পরিস্থিতি বদলেছে আর বিয়েকে আপনার ও আপনার সঙ্গীর ব্যক্তিগত পছন্দ-অপছন্দের চেয়ে বেশি গুরুত্ব দিতে হবে। এটাকে এক প্রতিবন্ধকতা হিসেবে না দেখে বরং এটার উপকারিতাগুলো বিবেচনা করুন।

খোলাখুলিভাবে কথা বলতে হবে।  ‘আপনার সঙ্গী যা বলেন অথবা মনে করেন, সেটার সঙ্গে আপনাকে যে পুরোপুরিভাবে একমত হতে হবে, তা নয় কিন্তু আপনাকে খোলাখুলিভাবে তার মতামত বিবেচনা করতে হবে। আপনার সঙ্গী যখন কোনো সমস্যা নিয়ে আপনার সঙ্গে কথা বলার চেষ্টা করেন, তখন আপনি যদি দু-হাত ভাঁজ করে বসে থাকেন অথবা অসম্মতভাবে মাথা নাড়তে থাকেন (কিংবা মনে মনে তা করে থাকেন), তাহলে আপনাদের আলোচনা থেকে কখনোই কোনো সমাধান বের হবে না।’

আত্মত্যাগের প্রয়োজন। কেউই এইরকম একজন সঙ্গীর সঙ্গে থাকা উপভোগ করবেন না, যিনি মনে করেন, “আমি যা চাই তাই করতে হবে কারণ সেটাই ঠিক।” দু-জন সাথিই যখন আত্মত্যাগের মনোভাব দেখায়, তখন তা ভালো ফল নিয়ে আসে।’

 

adjustment  2আপনি যা করতে পারেন

* সঠিক মনোভাব নিয়ে কথাবার্তা শুরু করুন।
* যে-বিষয়গুলোতে একমত, সেগুলো খুঁজে বের করুন।
* সমাধানে পৌঁছানোর জন্য নিজেদের মতামত প্রকাশ করুন।
* আপনার দৃষ্টিভঙ্গিকে রদবদল করতে ইচ্ছুক হোন।

একটা আলোচনা সাধারণত যেভাবে শুরু হয়, সেভাবেই শেষ হয়। আপনি যদি রূঢ়ভাবে কথা বলা শুরু করেন, তাহলে শান্তিপূর্ণভাবে মানিয়ে নেওয়ার সম্ভাবনা খুবই কম হবে।

 

যে-বিষয়গুলোতে একমত, সেগুলো খুঁজে বের করুন। মানিয়ে নেওয়ার জন্য আপনাদের প্রচেষ্টা যদি কেবল তর্কবিতর্কের দিকে চলে যায়, তাহলে এমনটা হতে পারে যে, আপনারা হয়তো সেই বিষয়গুলোর ওপর অত্যধিক মনোযোগ দিচ্ছেন, যে-বিষয়গুলোতে আপনারা একমত নন। এর পরিবর্তে, সেই বিষয়গুলোর প্রতি মনোযোগ কেন্দ্রীভূত করুন, যেগুলোতে আপনারা একমত

যে-বিষয়গুলোতে একমত, সেগুলো খুঁজে বের করার জন্য এটা করে দেখুন:

আপনারা প্রত্যেকে দুটো কলাম দেওয়া একটা তালিকা তৈরি করুন। প্রথম কলামে লিখুন যে, আলোচ্য বিষয়ের কোন কোন দিককে আপনি মেনে নিতে পারবেন না। দ্বিতীয় কলামে লিখুন যে, কোন কোন দিককে আপনি মেনে নিতে পারবেন। এরপর, দু-জনে তালিকা নিয়ে আলোচনা করুন। আপনারা হয়তো দেখতে পাবেন, আপনারা যতটা মনে করেছিলেন, সেটার চেয়েও বেশি বিষয়ে আপনারা একমত। যদি তা-ই হয়ে থাকে, তাহলে মানিয়ে নেওয়া ততটা কঠিন হবে না। আপনাদের মতের মধ্যে মিল যদি না-ও থাকে, তবুও আলোচ্য বিষয়ের প্রতিটা দিক লিখে রাখা আপনাদেরকে বিষয়টা আরও সঠিক দৃষ্টিভঙ্গিতে দেখতে সাহায্য করবে।

সমাধানে পৌঁছানোর জন্য নিজেদের মতামত প্রকাশ করুন। কোনো কোনো বিষয় সমাধান করা হয়তো তুলনামূলকভাবে সহজ। কিন্তু, জটিল সমস্যাগুলোর ক্ষেত্রে স্বামী ও স্ত্রী নিজেদের মতামত প্রকাশ করার মাধ্যমে এমন কোনো সমাধান খুঁজে বের করতে পারেন, যেটা হয়তো তারা একাকী বের করতে পারতেন না। এইধরনের কাজ তাদের বন্ধনকে আরও দৃঢ় করতে পারে।

আপনার দৃষ্টিভঙ্গিকে রদবদল করতে ইচ্ছুক হোন। যখন একে অপরের প্রতি প্রেম ও সম্মান থাকে, তখন দু-জনেই একে অপরের দৃষ্টিভঙ্গি বিবেচনা করতে আর এমনকী নিজেদের মতামত পরিবর্তন করতে ইচ্ছুক থাকেন। ইফতি নামে একজন স্বামী বলেন, “আপনি হয়তো কিছু কিছু বিষয় করতে পছন্দ করেন না কিন্তু আপনার সঙ্গীর কারণে পরবর্তীকালে আপনি তা-ই করতে পছন্দ করবেন।

তাজিন/প্রতিক্ষণ/এডি/আরেফিন

আরো সংবাদঃ

মন্তব্য করুনঃ

পাঠকের মন্তব্য

20G